সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। তবে একইসঙ্গে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে জানান, সরকার পরিচালনার প্রক্রিয়া ও সংস্কার নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ করা হয়নি।
বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান তাঁর বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী কখনো জড়িত হবে না এবং কাউকে জড়াতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনসহ যেকোনো দায়িত্বে সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ ও নিষ্ঠাবান থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে এক ধরনের অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং তা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসন কাঙ্ক্ষিত পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যেতে পারছে না।
মানবিক করিডর বিষয়ে এক প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, রাখাইন ইস্যু অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি বৈধ, নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ অনুচিত হবে।
তিনি জানান, আগস্ট থেকে কিছু মহল তাঁকে ও সেনাবাহিনীকে অন্যায্যভাবে টার্গেট করছে। তিনি উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক সংঘটিত সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন।
সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী মনে করেন, জাতীয় স্বার্থে সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সেনাবাহিনীকে উপেক্ষা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। সংস্কারের প্রয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীকেও অন্তর্ভুক্ত করা যেত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, অতীতের মতোই সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী এখনও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তবে মানবিক করিডর ইস্যুতে সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। সরকারকে আরও সমন্বিত ও সচেতনভাবে এগোতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন