দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের এই নীরবতা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, তাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত যেমন আন্তর্জাতিক মহলের চাপে রয়েছে, তেমনি নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বিপাকে পড়েছে দিল্লি।
এরই মধ্যে জয়ের সফর ঘিরে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা। এটি কি শুধুই পারিবারিক সফর, নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনো সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক পরিকল্পনা—তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব সংকট, আন্তর্জাতিক মহলের তীক্ষ্ণ নজর এবং দলটির ভবিষ্যৎ—সব মিলিয়ে অনেকেই মনে করছেন, জয় ভারতের এক কৌশলগত ‘পলিটিকাল কার্ড’ হয়ে উঠেছেন।
যদিও সজীব ওয়াজেদ জয় বারবার বলেছেন, তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন, তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। এতে দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জয়ের এই সফরকে অনেকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গ্রহণের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন।
তবে জয়ের নেতৃত্ব নিয়ে দলের ভেতরেই প্রশ্ন রয়েছে। দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান, সরাসরি রাজনীতিতে অনুপস্থিতি এবং কিছু বিতর্কিত মন্তব্য তার গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের মতে, তিনি দল পরিচালনায় উপযুক্ত নন।
আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে তার নাগরিকত্ব। খবরে জানা গেছে, তিনি সম্প্রতি মার্কিন নাগরিকত্ব নিয়েছেন এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। ফলে একজন বিদেশি নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার ভূমিকা কতটা বৈধ ও গ্রহণযোগ্য—তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার নির্বাসন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দুর্বলতা এবং ভারতের নতুন কূটনৈতিক তৎপরতা—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণ তৈরি হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগ কিংবা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ সফর ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন