জামায়াত নেতার মৃ ত্যু, তোপের মুখে বিএনপির নেতারা

লক্ষ্মীপুরে হামলায় আহত হয়ে কাউছার আহমেদ মিলন নামের এক জামায়াত নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা, আর বিএনপি নেতারা পড়েছেন তীব্র সমালোচনার মুখে।

শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের রাজিবপুর এলাকায় কাউছার আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা শাখার ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি এবং স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। তার পিতার নাম মৃত মমিন উল্যা।

জানাজায় অংশ নেয়া জামায়াত নেতাকর্মীরা এই মৃত্যুর জন্য বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। জানাজাস্থলে উপস্থিত বিএনপি নেতাদের লক্ষ্য করেও ক্ষোভ ঝাড়েন জামায়াত কর্মীরা। পরে হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে স্লোগান ও মিছিল করেন তারা।

নিহতের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার রিয়াজ হোসেন বাবলু ও সোহাগের সঙ্গে কাউছারের ভাই আলতাফ হোসেন আরজুর মারামারি হয়। এতে কাউছারসহ পরিবারের চারজন আহত হন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন কাউছার এবং সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। পরিবারের দাবি, রিয়াজদের হামলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, কয়েক সপ্তাহ আগে কাউছারের ভাতিজি টিউবওয়েল চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত হন। সেই জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রিয়াজদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে দুপুরে ফের মারামারির ঘটনা ঘটে, যার জেরে আহত হন উভয় পক্ষ। ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পর কাউছার মৃত্যুবরণ করেন।

অভিযুক্ত রিয়াজ দাবি করেন, “চুরির ঘটনায় কাউছারের ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। কাউছারের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ ছিল না। শুনেছি তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।”

এ বিষয়ে জামায়াত নেতা ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “কাউছার আমাদের ইউনিট সভাপতি ছিলেন। তাকে সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।”

বিএনপি নেতা হাসিবুর রহমান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এটি একেবারেই স্থানীয় একটি ঘটনা। সকালে ঝগড়া হয়েছিল, সন্ধ্যায় তিনি মারা গেছেন। আমরা শুনেছি, আগেও তিনি দুইবার স্ট্রোক করেছিলেন। তার মৃত্যুর পেছনে স্বাস্থ্যগত কারণও থাকতে পারে। তবে আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।”

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. অরুপ পাল জানান, “ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনই মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ বলা সম্ভব নয়। রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে।”

এদিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. আবদুল মোন্নাফ জানিয়েছেন, এখনো নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন