রাতে শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি, সকালের ঢাকায় ভিন্ন চিত্র

ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোর বিষয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শতভাগ অপসারণের দাবি করা হলেও আজ সকালে বাস্তব চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অফিসসংলগ্ন আগারগাঁওয়ের ‘পরিসংখ্যান সড়ক’ এলাকায় ঈদের দিন শনিবার দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির বর্জ্য সরানোর কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এই স্থান থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরের মধ্য পীরেরবাগ এলাকায় আজ রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় গিয়ে দেখা যায়, ‘৬০ ফুট সড়ক’ নামে পরিচিত কামাল সরণির একাংশে এখনও বর্জ্যের স্তূপ জমে আছে এবং তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এমন চিত্র শুধু এই এলাকাতেই নয়—মধ্যমণিপুর, পশ্চিম আগারগাঁও, বেনারসিপল্লি, শেওড়াপাড়া, প্যারিস রোড মার্কেটসংলগ্ন এলাকা, কালশী, সাংবাদিক আবাসিক এলাকা ও মিরপুর–১১ নম্বর সি ব্লকের বিভিন্ন অংশেও পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও করপোরেশনের কনটেইনার পূর্ণ হয়ে গেছে, আবার কোথাও রাস্তার পাশে বা এসটিএস পয়েন্টে (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) বর্জ্য ফেলে রাখা হয়েছে।

গতকাল রাতেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পৃথকভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, শহরের শতভাগ কোরবানির বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।

বিশেষ করে মধ্য পীরেরবাগের ৬০ ফুট সড়কে সড়কের পূর্ব পাশজুড়ে বর্জ্য স্তূপ আকারে জমে রয়েছে। করপোরেশনের দেওয়া পলিথিনে ভরা বর্জ্যও সেখানে ছড়িয়ে রয়েছে। একই অবস্থা মধ্যমণিপুরের বারেক মোল্লা মোড়েও, যেখানে জমা বর্জ্যের কারণে এক পাশ দিয়ে কেবল যানবাহন চলাচল করছে।

স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গতকাল বিকেলের পর থেকে কোনো বর্জ্যবাহী গাড়ি ওই এলাকায় আসেনি। বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হলেও তা আমিনবাজার ল্যান্ডফিল সাইটে নেওয়া হয়নি।

এসব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য না সরানোয় পরিবেশ দূষণ এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই দুর্গন্ধ ও জীবাণুবাহিত বাতাস বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও একইভাবে শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি করলেও আজ সকালে দেখা যায়, অলিগলি ও সড়কের পাশে এখনও ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে কোরবানির অবশিষ্টাংশ।

উপসংহার

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যেভাবে শতভাগ বর্জ্য অপসারণের দাবি করা হয়েছিল, বাস্তবে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিকরা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন