যুক্তরাষ্ট্রে ঈদের জামাতে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। শুক্রবার (৬ জুন) ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিসহ স্থানীয় মুসলিমদের অংশগ্রহণে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তবে নিউ ইয়র্কসহ কিছু অঞ্চলে চাঁদ দেখা নিয়ে মতবিরোধ থাকায় কোথাও কোথাও শনিবারও ঈদ উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে।

মুসল্লিদের ধর্মীয় আবেগ ও সংহতির চিত্র ফুটে ওঠে ঈদের খুতবায়। অধিকাংশ খুতবায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গাজায় শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানানো হয়। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের সব মুসলমানের জন্য দোয়া করা হয়।

এবারের ঈদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তিন হাজারেরও বেশি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। খোলা মাঠ, মসজিদ, এমনকি গির্জার মিনলায়তনেও নামাজের আয়োজন করা হয়। যেসব এলাকায় মসজিদের সুবিধা নেই, সেখানে বছরের পর বছর গির্জার স্থানেই জুমা ও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বিশ্লেষণ বলছে, গত দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদের সংখ্যা ৩২ শতাংশ বেড়েছে। ২০০০ সালে যেখানে মসজিদের সংখ্যা ছিল ১,২০৯টি, তা ২০১১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২,১০৬টিতে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা ২,৭৯৬টি। সবচেয়ে বেশি মসজিদ রয়েছে নিউ ইয়র্কে ৩৪৩টি, এরপর ক্যালিফোর্নিয়ায় ৩০৪টি এবং টেক্সাসে ২২৪টি।

বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পরিচালিত প্রায় ২০০টির বেশি মসজিদ ও সংলগ্ন মাঠে এ বছর ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া জামাতগুলো চলে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। জামাত নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন নেয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

নিউ ইয়র্কের অন্যতম বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে। এছাড়া ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, ওজন পার্ক, এস্টোরিয়া, জ্যাকসন হাইটস, ম্যানহাটনসহ অন্যান্য এলাকাতেও বিপুল মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যাসাচুসেটস, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ওয়াশিংটন ডিসি, ওহাইও, ইলিনয়স, মিশিগানসহ প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে মসজিদ এবং খোলা মাঠে দেড় শতাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সবখানেই ছিল একটি সাধারণ আবেদন—বিশ্বজুড়ে শান্তি, বিশেষত ফিলিস্তিনে নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন