কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে খুশি করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক আন্দোলন (এনসিপি) নেত্রী নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের উচিত দেশের স্বার্থ এবং জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া। দেশের জন্য কোন সিদ্ধান্ত উপযোগী, সেটাই বিবেচ্য হওয়া দরকার।”
বিভিন্ন সংগঠনের সাম্প্রতিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চা বাগান বন্ধ, নগর ভবন অবরোধ কিংবা যমুনা ঘেরাওয়ের হুমকির মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চলছে। সরকারকে এখন পক্ষপাতহীন থেকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
বিএনপির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “তারা আগে বলত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেলে তারা যাবে না। এখন তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ। তাহলে তাদের আর অংশগ্রহণে বাধা কোথায়?”
নাহিদ ইসলাম মনে করেন, দেশে দীর্ঘদিন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। “স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ তৈরি হবে। এই উদ্যোগেই গণতন্ত্রের পথে দেশ এগিয়ে যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ত্বরিত সময়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমরা এই দাবি সামনে এনেছি। সরকারের অংশ থাকাকালেও আমরা এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি। ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা বিষয়টি বারবার তুলে ধরেছি।”
ইলেকশন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি বলেন, “ইশরাক হোসেনের মামলায় কমিশনের নিরব ভূমিকা পক্ষপাতের পরিচায়ক। তারা কোনো প্রতিরোধ করেনি, এমনকি আপিলও করেনি, যা সন্দেহ উস্কে দেয় যে কমিশন একটি নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে।”
এনসিপির পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কমিশনের সামনে আমাদের দাবি জানাব। যদি তারা কর্ণপাত না করে, তাহলে আমাদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে, তবে তা হবে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে।”
শাহবাগ অবরোধ, নগর ভবন বন্ধ ও যমুনা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কাম্য নয়। দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে কোনো রাজনৈতিক লাভ আদায় করা ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমেই সংকটের সমাধান সম্ভব, এবং সেটিই হবে দেশের জন্য মঙ্গলজনক।”
উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে নিয়ে এনসিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যদি প্রকৃত অভিযোগ থাকে, তা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হোক। আর যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তবে যারা এই অভিযোগ তুলছে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন