করিডরের নামে দেশে মার্কিনিদের ঘাঁটি জাতি মানবে না: রফিকুল ইসলাম মাদানী

 

এ দেশে করিডরের নামে মার্কিনিদের ঘাঁটি জাতি মানবে না: রফিকুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩ মে ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ এনেছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেছেন, ‘মানবিক করিডর’-এর নামে দেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি তৈরির পথ তৈরি করছেন ড. ইউনূস, যা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

শনিবার (৩ মে) বিকেলে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত এক পোস্টে রফিকুল ইসলাম বলেন, “জাতিকে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যস্ত রেখে, মানবিক করিডরের নামে এ দেশে মার্কিনিদের ঘাঁটি তৈরির পথ সহজ করবেন—আপনি যদি পশ্চিমকে খুশি করে জাতিসংঘের মহাসচিবও হয়ে যান, তবুও জাতি আপনাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে! অতএব, এই দুরভিসন্ধি বন্ধ করুন।”

রফিকুল ইসলামের এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এবং বিতর্কের জন্ম দেয়। তার সমর্থকরা স্ট্যাটাসটিকে ‘সত্য বলার সাহস’ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, এটি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং বিভ্রান্তিকর বার্তা দিতে পারে।

অনেকেই তাকে এখনো ‘শিশু বক্তা’ নামে চেনেন। তার কণ্ঠস্বর, মুখাবয়ব এবং বাচনভঙ্গি কারণে তিনি দীর্ঘদিন শিশু বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে নথি অনুযায়ী, রফিকুল ইসলাম ১৯৯৪ সালে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সে হিসেবে তার বয়স বর্তমানে ৩১ বছর।

তিনি ইসলামী বক্তা হিসেবে ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত ধর্মীয় বয়ান করে থাকেন। গত কয়েক বছরে রাজনৈতিক বক্তব্য, বিতর্কিত মন্তব্য এবং একাধিক মামলার কারণে তিনি আলোচনায় এসেছেন।

সম্প্রতি কিছু গোষ্ঠী দাবি করে আসছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে একটি আন্তর্জাতিক ‘মানবিক করিডর’ গঠনের পরিকল্পনা চলছে, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলো এই অঞ্চলে সামরিক বা কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নিতে পারে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা আসেনি।

রফিকুল ইসলামের এই স্ট্যাটাস সেই বিতর্কিত দাবিকেই আরও উসকে দিয়েছে। এতে ড. ইউনূসের ওপর সরাসরি দেশের স্বার্থবিরোধী ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে, যদিও এ বিষয়ে ড. ইউনূস বা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আইন বিশ্লেষকদের মতে, এমন মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং জাতীয় নিরাপত্তা বা বৈদেশিক সম্পর্কের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। একটি নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ জনসম্মুখে তুলে ধরা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন