তিনি বলেন, “তিনজন খালাস পেয়েছে, এটা মেনে নিতে পারছি না। ওরা যদি ঘটনা গোপন না করে সময়মতো চিকিৎসা দিত, আমার মেয়েটা হয়তো বেঁচে যেত। আমি বিচার চেয়েছিলাম, কিন্তু পূর্ণ বিচার পেলাম না।”
শনিবার (১৭ মে) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মাগুরার বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে তার স্ত্রী জাহেদা বেগম, ছেলে সজীব শেখ এবং রাতুল শেখকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেন আদালত।
সরকার পক্ষের আইনজীবী ও ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, মাত্র ১৪ কার্যদিবসে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২৭ এপ্রিল, শেষ হয় ৭ মে।
রায় ঘোষণার দিন সকাল থেকে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। জনতা ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সকাল ৯টার দিকে আসামিদের ঝিনাইদহ কারাগার থেকে আনা হয়। হিটু শেখসহ আসামিরা ছিলেন শান্ত এবং নিরুত্তর। রায়ের সময় হিটু শেখকে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় আদালত কক্ষে কাঁদতে দেখা যায়।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সরকার পক্ষ জানায়, খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পাওয়ার পর নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সোহেল আহমেদ বলেন, “হিটু শেখ চাইলে উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।”
প্রসঙ্গত, গত ৬ মার্চ মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে একে একে মাগুরা, ফরিদপুর এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
৮ মার্চ শিশুটির মা আয়েশা আক্তার হিটু শেখ, তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা, মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন। ২৩ এপ্রিল চার্জগঠন এবং ২৭ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন