টুইংকেলের খোঁচায় কাঁপছে মোদি সরকারের ‘সংস্কৃতি যুদ্ধ’!

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে স্পটিফাইসহ বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে পাকিস্তানি গায়ক ও গায়িকাদের গান সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা ও আলোচনা। বিশেষ করে বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমারের স্ত্রী টুইংকেল খান্নার তীব্র ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

টুইংকেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “আবিদা পারভীনকে বাদ দিয়ে এখন ধিঞ্চাক পূজাকেই নতুন করে গান গাওয়ানো হবে?” এখানে আবিদা পারভীন একজন কিংবদন্তি সুফি শিল্পী, যাঁর গান সারাবিশ্বে জনপ্রিয়, অন্যদিকে ধিঞ্চাক পূজা মূলত ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া নিম্নমানের সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচিত। এই মন্তব্যের মাধ্যমে টুইংকেল মোদি সরকারের সংস্কৃতি-বিদ্বেষী নীতিকে তীব্রভাবে ব্যঙ্গ করেছেন।

টুইংকেলের পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে নেটিজেনদের মধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, কেন কোনো দেশের শিল্প ও সংস্কৃতিকে জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ করা উচিত? যেখানে সঙ্গীত মানুষের হৃদয়ের ভাষা এবং তার কোনো সীমান্ত নেই।

দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সঙ্গীত একটি সংযোগ হিসেবে কাজ করে আসছে। কোক স্টুডিওর মতো উদ্যোগ এবং দুই দেশের শিল্পীদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে, রাজনৈতিক বিভেদের বাইরে সঙ্গীত মানুষের হৃদয় একত্রিত করে।

আবিদা পারভীন, আতিফ আসলাম, তালহা আনজুমসহ অনেক জনপ্রিয় পাকিস্তানি শিল্পীর গান স্পটিফাইয়ে হঠাৎ কমে গেছে। যেসব গান আগে প্রতিদিন কোটি কোটি বার শোনা যেত, তা এখন লাখের নিচে নেমে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, মান্নু ও আনুরাল খালিদের ‘ঝোল’ গানটি আগে দিনে প্রায় ১০ লাখ বার শোনা যেত, এখন তা কমে ৩ লাখের কাছাকাছি।

শুধু গান নয়, পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা খান ও মাওরা হোসেনের অভিনীত বলিউড ছবির দৃশ্যও কেটে ফেলা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে থাম্বনেইল পাল্টে দেওয়া, কৃতিত্বের উল্লেখ বাদ দেওয়া এবং পোস্টের রিচ কমিয়ে দেওয়ার মতো নিদৃষ্ট সংস্কার চলছে।

জাতীয় পরিচয়ের নামে এই ধরনের বয়কট শুধু সৃজনশীলতাকে ক্ষুণ্ণ করে না, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ককেও বিপন্ন করে। শিল্প-সংস্কৃতির মাধ্যমে বন্ধন গড়ে ওঠে, সেটি নষ্ট না করে সংরক্ষণ করাই হওয়া উচিত সব দেশের দায়বদ্ধতা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন