ক্লিন ইমেজ আওয়ামী নেতার চাহিদা বাড়ছে ছোটবড় সব দলে

সম্প্রতি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে ছাত্রসমাজ ও বৈষম্যবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের চাপের মুখে তড়িঘড়ি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া এবং আইনি দিক নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন বৈষম্য আন্দোলনের কয়েকজন শীর্ষ নেতা।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বড় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও প্রকাশ্য কোনো প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েনি।

নিষেধাজ্ঞার পর সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে দলটির ‘ক্লিন ইমেজ’ সম্পন্ন নেতাদের ভবিষ্যৎ। দেশজুড়ে আলোচনায় উঠে এসেছে, রাজনৈতিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা নেতাদের প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আকর্ষণ। আওয়ামী লীগের যেসব নেতা দুর্নীতির অভিযোগমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি নিয়ে রাজনীতি করছিলেন, তাদের অনেককে দলে ভেড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করছে একাধিক রাজনৈতিক দল।

এই প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী একাধিক জনসভায় বলেছেন, ক্লিন ইমেজের আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিবেচনায় নিয়ে দলীয় ছাতার নিচে জায়গা দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের দল ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখছে। কেউ যদি দলবদল করে রাজনীতির ময়দানে অবদান রাখতে চান, তবে তাকে সুযোগ দেয়া হবে—এমন বার্তা দিয়েছেন তারা।

এদিকে আওয়ামী লীগ ভাঙনের এই সময়ে দলীয় নেতৃত্বে বিভাজন দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ নিরবেই অন্যান্য দলে সক্রিয় হচ্ছেন, কেউ আবার প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। এ বিষয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকজন নেতার বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়ায় বোঝা যাচ্ছে, নিষেধাজ্ঞার পর প্রধান বিরোধী দলের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আগের মতো নেতিবাচক নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অনেক সাবেক নেতাই এখন নতুন রাজনৈতিক ঠিকানা খুঁজছেন। বড় ও মাঝারি রাজনৈতিক দলগুলো তাদের গ্রহণ করছে মূলত দুটি বিবেচনায়—জনসমর্থন এবং আর্থিক সামর্থ্য। যদিও এ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে—কোন মাত্রার জনভিত্তি কিংবা আর্থিক সামর্থ্য থাকলে কাউকে ‘ক্লিন ইমেজ’ধারী বলা যায়? যদিও এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও অস্পষ্ট, বাস্তবতা হলো—আওয়ামী লীগপন্থী বহু নেতা ইতোমধ্যে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন