পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি মসজিদে আজান বা ইমামতি করতে পারবে না—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। তার এই মন্তব্যকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা।
শনিবার (১৭ মে) বিকেলে আটঘরিয়ায় বিএনপি ও জামায়াতের সংঘর্ষে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে তিনি এই বক্তব্য দেন। এরপর রাতেই তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে হাবিব বলেন, “দল যে সিদ্ধান্ত নেবে তা অবশ্যই মানা হবে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি বলছি—আটঘরিয়ার কোনো মসজিদে জামায়াতের কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবে না, কোনো ইমাম নামাজ পড়াতে পারবে না।” তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গত শুক্রবার দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ফলে মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করতে পারেনি—এটা একটি ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক ঘটনা।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত মিথ্যাচারে অভ্যস্ত, স্বাধীনতা বিরোধী এবং পাকিস্তানের দোসর। এদের পেছনে নামাজ হয় না।” জামায়াতের অফিসে কোরআন পোড়ানোর প্রসঙ্গে হাবিব দাবি করেন, “বিএনপির কেউ কোরআন পোড়ায়নি, বরং তারাই নিজেরাই এমন কাজ করেছে। যদি বিএনপির কেউ কোরআন পোড়ানোর ভিডিও দেখাতে পারে, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে সমস্ত দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।”
এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা নকীবুল্লাহ হাবিবুর রহমানের বক্তব্যকে “নিকৃষ্ট ও ধর্মবিরোধী” আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “আজান ও ইমামতির মতো পবিত্র বিষয় নিয়ে হুমকি-ধমকি কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমান মেনে নিতে পারে না। হাবিব সাহেবের বক্তব্য ঘিরে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী স্টাইলে বিএনপি আটঘরিয়ার বিভিন্ন অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখল করে নিয়েছে। চাঁদাবাজি, হামলা, ভাঙচুর, এমনকি ঈশ্বরদী থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। কোরআন শরিফ পোড়ানো হয়েছে, মসজিদ তালাবদ্ধ করে ইমামকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের নির্বাচনে জামায়াতপন্থী প্রার্থীদের ফরম তুলতে বাধা দেন বিএনপির নেতারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে, পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুর ঘটে। একপক্ষ আরেক পক্ষকে দায়ী করে গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে আসছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন