নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় চলতি মৌসুমে চীনা বাদামের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। মাঠজুড়ে সবুজ বাদামের সমারোহ আর কৃষকদের মুখে হাসি—এ যেন প্রকৃতির এক অনন্য চিত্র।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠের পর মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বাদামের ক্ষেত, যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়া, আহসানগঞ্জ, সাহাগোলা, ভুঁপাড়া ও নন্দনালী এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি চাহিদা থাকায় বাজারে দামও ভালো পাওয়ার আশা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি রবি মৌসুমে (২০২৪–২৫) বাদাম চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিতে প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘বিনা চিনাবাদাম-৬’, ‘বিনা চিনাবাদাম-৮’ এবং ‘বারি চিনাবাদাম-৮’ জাতের চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ছিল কৃষি অনুকূল। সময়মতো বৃষ্টিপাত ও উপযুক্ত তাপমাত্রার কারণে প্রতি হেক্টরে গড় ফলন হয়েছে প্রায় ১.৯ মেট্রিক টন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ সাফল্য আগামী বছর চাষের পরিধি আরও বাড়াবে।
নন্দনালী গ্রামের বাদামচাষি আফজাল হোসেন জানান, "চীনা বাদাম চাষে খুব বেশি কীটনাশক বা অতিরিক্ত পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। আমি এবার ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছি, ফলনও ভালো। আশা করছি বাজারে ভালো দাম পাব।"
একই গ্রামের আরেক চাষি আসলাম উদ্দিন বলেন, “আমাদের চরাঞ্চলের বেলে মাটি বাদাম চাষের জন্য খুব উপযোগী। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদামে খরচ কম, লাভও বেশি। উপরন্তু, বাদামের বাজার সারা বছরই থাকে।”
চাহিদা ও লাভজনকতার দিক বিবেচনায় কৃষকরা এখন ধীরে ধীরে ধান কিংবা অন্যান্য শস্য বাদ দিয়ে চীনা বাদামের চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগের উদ্যোগ, প্রাকৃতিক সহায়তা ও কৃষকের আন্তরিকতায় চাষাবাদে তৈরি হয়েছে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন