সৌদি আরবে নারীদের জন্য তৈরি তথাকথিত 'পুনর্বাসন কেন্দ্র' দার আল-রেয়া আসলে একটি ভয়ঙ্কর দমনমূলক ব্যবস্থা—এমন অভিযোগ তুলেছেন সাবেক বন্দিনী ও মানবাধিকারকর্মীরা। তাদের দাবি, প্রেমে জড়ানো, ঘরের বাইরে যাওয়া কিংবা পরিবারের কথা না শোনার মতো ঘটনাকেই অপরাধ হিসেবে দেখা হয়, আর এই কেন্দ্রগুলোতে নারীদের উপর চলে নিষ্ঠুর শাস্তিমূলক আচরণ।
ভুক্তভোগীদের বর্ণনা অনুযায়ী, এসব কেন্দ্রে নারীদের রাখা হয় বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে। সপ্তাহব্যাপী চলতে পারে বেত্রাঘাত, বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষা এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ। পরিবার যদি তাদের সম্মানের জন্য কাউকে 'অবাধ্য' মনে করে, তাহলে সেই নারীকে বছরের পর বছর এ ধরনের কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়। এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ তিনটি—বিয়ে করা, পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি পাওয়া, অথবা আত্মহত্যা।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়—উত্তর-পশ্চিম সৌদি আরবের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছেন এক তরুণী। তাকে নামানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে একটি ক্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণী দার আল-রেয়া নামক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আটক ছিলেন।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দার আল-রেয়া আদতে একটি কারাগারের মতো। এখানে 'পুনর্বাসন' শব্দটি ব্যবহৃত হলেও বাস্তবতা ভয়াবহ। অভিযোগ রয়েছে, কোনো তরুণী প্রেম করলে বা বিয়ের আগে সম্পর্ক রাখলে, অথবা পরিবারের অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে গেলে তাকেই পাঠানো হয় এ ধরনের কেন্দ্রে।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয় অসংখ্য নারীকে, যাদের মুক্তি নির্ভর করে পরিবারের পুরুষ সদস্যের সিদ্ধান্তের ওপর। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সেখানে চলা নির্যাতন তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়, যা কখনও কখনও আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন