গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের কাছে আটক থাকা অন্তত ২০ জন ইসরাইলি জিম্মি নিহত হয়েছেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সহিংসতায় আরও অন্তত ৫৪ বন্দির জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
শুক্রবার (৩০ মে) ইসরাইলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ এক অনুসন্ধানে এ তথ্য প্রকাশ করে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা অভিযানের ৬০০ দিনেরও বেশি সময়জুড়ে ইসরাইলি বিমান হামলা ও সেনা অভিযানে এসব জিম্মিরা সরাসরি প্রাণ হারিয়েছেন অথবা হামলার কাছাকাছি অবস্থানের কারণে তারা নিহত হয়েছেন।
হারেৎজ জানিয়েছে, বন্দিদের নিরাপত্তা বিবেচনায় শত শত হামলা স্থগিত করলেও ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রায়ই কয়েকশ মিটারের ‘নিরাপদ দূরত্বে’ অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছে। এক সামরিক সূত্র জানায়, “যত বেশি হামলা চালানো হবে, জিম্মিদের জন্য ঝুঁকিও তত বাড়বে।” আরেকটি সূত্র উল্লেখ করে, “যেখানে জিম্মিদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য নেই, সেখানে হামলা চালাতে কোনো বাধা নেই।”
এ বিষয়ে ইসরাইল ও হামাস উভয় পক্ষ থেকেই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৪ হাজার ৩৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস হঠাৎ ইসরাইলি ভূখণ্ডে আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ১২০০ জন ইসরাইলিকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এরপরই গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চলা এ অভিযানের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের চাপে ১৯ জানুয়ারি উভয়পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
তবে ওই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ১৮ মার্চ থেকে আবারও পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। দ্বিতীয় দফার অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১১ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন