জুলাই আন্দোলনে আহত প্রকৌশলী মনিরের কিডনিই অচল

জুলাই আন্দোলনে আহত প্রকৌশলী মনিরের  কিডনিই অচল

 নাটোরের বড়াইগ্রামের রাজনৈতিক কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন মনির এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। জুলাই আন্দোলনে আহত হওয়ার পর তার শরীরে দেখা দেওয়া জটিলতা ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে তার দুটি কিডনিই অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।


স্থানীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ মনির বনপাড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মালিপাড়ার বাসিন্দা এবং মাওলানা সিরাজুল ইসলামের পুত্র। তিনি জামায়াতে ইসলামের পৌর শাখার সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।


প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট দুপুরে বনপাড়া বাজারে ফ্যাসিবাদবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করছিলেন মনিরের নেতৃত্বাধীন একটি দল। আন্দোলনের প্রস্তুতিকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা, তৎকালীন সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর দুই ভাগিনার নেতৃত্বে, তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন মনিরসহ অনেকে।


পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মনির বাড়ি ফিরে এলেও তার ডান পায়ের ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। বিভিন্ন চিকিৎসার পরও অবস্থার উন্নতি হয়নি।


চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ২৯ এপ্রিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের কল্যাণপুর শাখায় স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ বিন মিজানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।


চিকিৎসকরা জানান, মনিরের ডান পায়ের পুরনো আঘাত থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে সেলুলাইটিসে পরিণত হয়, যা ধীরে ধীরে তার কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বর্তমানে তার দুটি কিডনিই সম্পূর্ণরূপে অকেজো হয়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কিডনি, হৃদরোগ ও হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে কিডনি বায়োপসি সম্পন্ন হয়েছে, যার রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী চিকিৎসা নির্ধারণ করা হবে।


মনিরের বড় ভাই ও বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের পর থেকে মনির রাজনৈতিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন। তার শারীরিক অসুস্থতাকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে পারিনি। এখন তার জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।”

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন