পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের এক মেধাবী কলেজছাত্র ঢাকায় কাজের অভাবে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত কাওসার হোসেন (১৮) ছিলেন বাউফল সরকারি কলেজের এইচএসসি ২০২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ১০টার দিকে তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কাওসার বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শাহ আলম মৃধার ছেলে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর পরিবারের আর্থিক ভার লাঘবের আশায় রাজধানী ঢাকায় যান তিনি। তবে দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেও উপযুক্ত কোনো চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছিলেন কাওসার।
জানা গেছে, বুধবার (১৪ মে) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার কক্ষ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়, যেখানে লেখা ছিল: "আমার একটাই দোষ, আমি গরীব। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় জীবন ত্যাগ করলাম।"
দীর্ঘ সময় তার মরদেহ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে কাওসারের মা ঢাকায় গিয়ে মরদেহ আনতে ব্যর্থ হন। পরে এ বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বাউফল উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেন এবং দাফনের ব্যবস্থা নেন।
এ ঘটনায় বাউফল এবং কাওসারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাউফল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বশার তালুকদার বলেন, “কাওসার পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অনটনের মধ্যে ছিল। এই ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়।”
মেধাবী এই ছাত্র রেখে গেছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক ভাই ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন