নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস জনসমর্থন যাচাইয়ের জন্য পরিকল্পিত নাটক মঞ্চস্থ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রুমিনের ভাষ্য অনুযায়ী, "ড. ইউনূস সরাসরি পদত্যাগের কথা না বললেও, এনসিপির (ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি) মাধ্যমে তা ঘুরিয়ে প্রচার করেছেন।" তিনি আরও জানান, এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাংবাদিকদের বলেন—ড. ইউনূস সরে দাঁড়াতে পারেন।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে রুমিন বলেন, "এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বিএনপি চারবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি জামায়াতও চেষ্টা করেও সফল হয়নি। অথচ এনসিপি, যাদের সঙ্গে উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তারা বৈঠকে বসেছে। শুধু নাহিদই নন, মাহফুজ, আসিফ এবং হাসনাত আবদুল্লাহও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।"
তিনি অভিযোগ করেন, "গণমাধ্যমে যা আসে না, তার মধ্যেই প্রকৃত গল্প লুকিয়ে থাকে। যারা মিটিংয়ে থাকেন, তারাই ঠিক করেন কোন তথ্য বাইরে যাবে। ড. ইউনূস কেন হঠাৎ করেই এসব তথ্য নাহিদের মাধ্যমে প্রকাশ করালেন? এটা হয়তো এক ধরনের হতাশা বা পরিকল্পিত কৌশল। গত নয় মাসে তিনি কার্যত প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন—এটাও এক ধরনের সাফল্য!"
রুমিনের দাবি, "ড. ইউনূস নিজেকে রক্ষা করার পথ খুঁজছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনি দূরত্ব তৈরি করেছেন, তার পোষ্য দলটি বাদে। রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এমনকি সেনাবাহিনীর সঙ্গেও বিরূপ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কিছু আওয়ামীপন্থী যুবক সেনাপ্রধানকে নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য দিয়েছে, যা নজিরবিহীন।"
তিনি বলেন, "দেশের দীর্ঘদিনের রাজনীতিকদের কেউই সেনাবাহিনী সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেননি। সেনাবাহিনী বরাবরই ধৈর্য ধরেছে, সেনাপ্রধানও নিজস্ব মর্যাদা ও অবস্থান রক্ষা করে চলেছেন। গত নয় মাসে তাঁকে যেভাবে অবমাননা করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্টদায়ক। অন্য কেউ হলে হয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো।"
আলোচনার শেষদিকে রুমিন বলেন, "এই নাটকের মাধ্যমে ড. ইউনূস চেয়েছেন মানুষ যেন তাঁকে অনুরোধ করে থেকে যাওয়ার জন্য। বিএনপি বলুক—'আপনি না থাকলে দেশ চলবে না!' বৃহস্পতিবার রাতে নাটক, আর শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে তাঁর সমর্থকদের মিছিল—সবকিছুই ছিল সাজানো রাজনৈতিক কৌশল। চেয়ার খালি রেখে বোঝানো হচ্ছে যে এই চেয়ারই সবচেয়ে মূল্যবান। অথচ রাজনীতিতে কখনোই চেয়ারের অভাব হয় না।"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন