বর্তমানে দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের অধীনে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি। ভয়েস কল, ইন্টারনেট কিংবা অন্যান্য ডিজিটাল সেবার জন্য নিয়মিত মোবাইল রিচার্জ করছেন এই বিশাল গ্রাহকগোষ্ঠী। তবে এ রিচার্জের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেওয়া হচ্ছে পদ্মা সেতু উন্নয়ন তহবিলের নামে—যা গ্রাহকদের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
২০১৬ সালের মার্চে পদ্মা সেতুর অর্থায়নের লক্ষ্যে মোবাইল রিচার্জের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করে সরকার। এরপর থেকে প্রতিবার ১০০ টাকা রিচার্জে ১ টাকা করে কেটে নেওয়া হচ্ছে। অথচ ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু। প্রায় তিন বছর পার হলেও এখনো সেই সারচার্জ অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র জানায়, এই সারচার্জ বাবদ গত আট বছরে সরকার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করেছে। অথচ সংশ্লিষ্ট খাতে কতদিন পর্যন্ত এই আদায় চলবে—সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ঘোষণা নেই।
এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটররা বলছে, সময় এসেছে এই কর তুলে নেওয়ার। তারা আগামি বাজেটে পদ্মা সেতু সারচার্জ বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে।
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, “২০১৬ সালে যে এক শতাংশ সারচার্জ চালু হয়েছিল পদ্মা সেতুর জন্য, তা এখনো বহাল রয়েছে। অথচ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে অনেক আগেই।”
তিনি আরও বলেন, অতীতে যমুনা সেতুর ক্ষেত্রেও তহবিল সংগ্রহের জন্য বাস, ট্রেন এবং সিনেমার টিকিটের ওপর অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেতু নির্মাণের পরপরই তা প্রত্যাহার করা হয়। একই ধরনের সিদ্ধান্ত এখন পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোবাইল রিচার্জে সারচার্জ বাতিলের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই খাতে নতুন করে চিন্তা-ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে। যদিও আপাতত মোবাইল গ্রাহকদের জন্য কোনো ধরনের ভর্তুকির পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন