দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে নির্ধারিত দিনে হাজির না হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হারিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
বুধবার (১৪ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টিউলিপকে হাজির হতে বলা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান জানান, নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্তদের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক, আর না এলে আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
ড. মোমেন বলেন, “তিনি (টিউলিপ) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারিয়েছেন। এটি শুধু তার ক্ষেত্রে নয়, নিয়ম সবার জন্য সমান। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হতে পারে।”
চেয়ারম্যান আরও জানান, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে, যা মূলত বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে ঘুষ ও অর্থপাচার সংশ্লিষ্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলো হলো—ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল, কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দর এবং রাডার স্থাপন।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে সিভিল অ্যাভিয়েশনের চারটি প্রকল্পের তদন্ত প্রতিবেদন আসছে। সেগুলো আমরা জনসমক্ষে তুলে ধরব।”
এছাড়া তিনি জানান, টিউলিপের মতো যেসব অভিযুক্ত বিদেশে অবস্থান করছেন বা বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। অর্থপাচারের প্রক্রিয়া রোধে এবং পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনতে কমিশন কাজ করছে।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, “বিদেশে থাকা অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পারলেই টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। অনেকেই দেশের সম্পদ বিক্রি করে পাচার করছেন, যা নিয়ে আমাদের আরও গভীর অনুসন্ধান চালাতে হবে।”
একই সঙ্গে তিনি জানান, গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় অভিযুক্তদের মালিকানাধীন সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা, সেটিও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী-এমপিদের সন্তানদের বিলাসবহুল বিদেশজীবন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “তারা বিদেশে যে আয়েশী জীবন যাপন করছেন, তা আমাদেরও প্রশ্নের মুখে ফেলছে। অনেক সময় গণমাধ্যমের অনুসন্ধান থেকেই আমরা তথ্য পাই। আমাদের সক্ষমতা সীমিত হলেও এসব বিষয়ে কাজ অব্যাহত থাকবে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন