সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব তাহসীন রিয়াজের মধ্যে মুখোমুখি আলোচনায়। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ছিল একটি স্লোগান, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে সম্প্রতি এনসিপি একটি কর্মসূচি নেয়। দলটির প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচি পরে শাহবাগ মোড় অবরোধে রূপ নেয়। অভিযোগ উঠেছে, সেই কর্মসূচি থেকে ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর’—এ ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়েছে।
তবে এনসিপির পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাহসীন রিয়াজ। তার ভাষায়, “এই ধরনের স্লোগান আমরা দেইনি। আমাদের স্লোগান ছিল ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর।’ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে শব্দ বিকৃত করে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে। প্রয়োজনে ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করলেই সব পরিষ্কার হবে।”
তাহসীন দাবি করেন, “আমাদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ এবং যৌক্তিক দাবি ভিত্তিক। কারও অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়নি। ভিডিও ক্লিপে যদি ভিন্ন কিছু শোনা যায়, তবে সেটা এডিট করা হয়ে থাকতে পারে।”
অন্যদিকে, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা টকশোতে সরাসরি একটি ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করে দাবি করেন, “আমি কোনো অনুমান ভিত্তিক কথা বলিনি। প্রমাণসহ বলছি—সেই মঞ্চ থেকেই স্পষ্টভাবে ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ স্লোগান শোনা গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের সহিংস ও উস্কানিমূলক স্লোগান একটি গণতান্ত্রিক সমাজে ভয়ংকর বার্তা দেয়। এই অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি আমাদের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বিষ ছড়াচ্ছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, তাহসীন রিয়াজ বলেন, “যদিও কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভিন্নভাবে স্লোগান দিয়েছে, তবে সেগুলোর কোনো অফিসিয়াল অনুমোদন নেই। আমরা এই ধরনের বক্তব্যকে সমর্থন করি না এবং দায়িত্ব নিয়ে বলছি—এটা আমাদের দলীয় অবস্থান নয়।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিতর্কিত স্লোগানের সত্যতা, সম্পাদনার সম্ভাবনা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, যা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন