জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আন্দোলনকারীরা নয়, বরং ওই আন্দোলনের ছায়ায় পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরাই হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবার (১৪ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রকৃত শিক্ষার্থীরা নয়, বরং কিছু গোষ্ঠী যারা এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছে, তারাই এই হামলার পেছনে রয়েছে।”
তিনি জানান, আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বৈঠকের কথা থাকলেও, তারা নির্ধারিত কোনোটিতেই অংশ নেননি। বরং পরিকল্পনার বাইরে হঠাৎ করে পুরান ঢাকা থেকে কাকরাইল পর্যন্ত একটি মিছিল নিয়ে আসা হয়, যা ছিল পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত।
‘যথেষ্ট সহ্য করেছি, এবার কঠোর অবস্থান’
মাহফুজ আলম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আজ থেকেই আমরা কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। এতদিন ধৈর্য ধরেছি, আর নয়। সেবোটাজমূলক রাজনীতি এবার রুখে দেওয়া হবে।” তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী এ ধরনের ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে।
‘রাজনৈতিক সংযোগ তদন্তের দাবি’
হামলার পেছনে নির্দিষ্ট একটি অংশের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “আমি কারও নাম নিচ্ছি না, তবে যাদের সন্দেহভাজন বলে মনে করছি, তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। প্রশাসন এবং গণমাধ্যমের উচিত, এই ব্যক্তিদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা অনুসন্ধান করা।”
তিনি আরও দাবি করেন, গত আট মাস ধরে একটি চক্র তার বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করে আসছে এবং আজকের ঘটনাও তারই ধারাবাহিকতা হতে পারে।
‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্দোলনে বলপ্রয়োগ নয়’
আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, “শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে প্রথমেই সংলাপের পথ নেওয়া উচিত। সরাসরি বলপ্রয়োগ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি আমাদের জাতীয় ট্রমার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি আজকের ঘটনায় আহত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের দাবি যদি যৌক্তিক হয়, তবে সরকার আলোচনায় বসতে আগ্রহী। আপনারা সংলাপের দরজা খোলা রাখুন।”
আবাসন সংকট সমাধানে উদ্যোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, বিষয়টি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন